দৈনন্দিন
লিপি
Kusumkumari Das
(কুসুমকুমারী
দাশ)
1875–1948
ভূমিকা
কুসুমকুমারী
দাশ
(খ্রি.
১৮৭৫-১৯৪৮)
জন্মেছিলেন
আজকের
বাংলাদেশ-এর
বরিশাল
শহরে।
বরিশাল
জেলার
গৈলা
গ্রামের
চন্দ্রনাথ
দাস
তাঁর
বাবা
এবং
ধনমণি
দাস
তাঁর
মা।
জ্যাঠামশাই
কালীমোহন
দাস
ব্রাহ্মধর্
গ্রহণ
করলে
তাঁর
বাবা-মাও
ব্রাহ্মধর্
গ্রহণ
করেন
এবং
পুরো
দাস-পরিবারটাকে
বাধ্যত
গ্রাম
ছেড়ে
জেলা-শহর
বরিশাল-এ
উঠে
আসতে
হয়।
জীবনানন্দ
দাশ
লিখেছেন,
‘মার
কবিতায়
আশ্চর্
প্রসাদগুণ।
অনেক
সময়ে
বেশ
ভালো
কবিতা
বা
গদ্য
রচনা
করছেন,
দেখতে
পেতাম।
সংসারের
নানা
কাজকর্
খুবই
ব্যস্ত
আছেন,
এমন
সময়
ব্রহ্মবাদী’র
সম্পাদক
মনোমোহন
চক্রবর্ী
এসে
বললেন,
এক্ষুনি
ব্রহ্মবাদী’র
জন্য
তোমার
কবিতা
চাই,
প্রেসে
পাঠাতে
হবে,
লোক
দাঁড়িয়ে
আছে।
শুনে
মা
খাতা
কলম
নিয়ে
রান্নাঘরে
ঢুকে
এক
হাতে
খুন্তি
আর
এক
হাতে
কলম
নাড়ছেন,
দেখা
যেত,
যেন
চিঠি
লিখছেন,
বড়
একটা
ঠেকছে
না
কোথাও।
আচার্
চক্রবর্ীকে
প্রায়
তখনই
কবিতা
দিয়ে
দিলেন।
স্বভাব-কবিদের
কথা
মনে
পড়ত
আমার,
আমাদের
দেশের
লোক-কবিদের
স্বভাবী
সহজতাকে।’
সংসারের
বিশাল
ভারে
হাঁ-মুখ
দৈনন্দিন
কতর্ব্য-সমাধানের
পরে
পরিমিত
অবসরের
সময়ে
লেখাপড়ার
চর্া
করা
ছাড়াও
কুসুমকুমারীর
জীবনযাপনের
তৃতীয়
একটি
খাত
ছিল:নিজস্ব
ব্যক্তিত্বের
একটি
স্বকীয়
প্রকাশ;
তাঁর
কতর্ব্যবোধ
ছিল
সুস্পষ্ট,
ঔচিত্যবোধ
অবিচলিত
এবং
সিদ্ধান্ত
দৃঢ়,
এবং
প্রায়শ
তারা
তাঁর
সুপ্রোথিত
ধর্বোধ
-অনুমোদিত
এবং
–নিয়ন্ত্রিত।
ঘরের
গন্ডির
বাইরে
এসে
সামাজিক
অনুষ্ঠানে
ও
ব্যবহারিক
প্রয়োজনে
মেয়েদের
যোগ
দেবার
ও
অংশ
নেবার
প্রচলন
ব্রাহ্ম
মহিলারাই
প্রধানত
করেন
এ-দেশে
নিজেদের
ধর্ীও
অনুরোধে;
এই
ব্যাপারে
বরিশাল
শহরে
নেতৃত্বটা
গিয়ে
পড়েছিল
প্রায়
কুসুমকুমারীর
দায়িত্বে।
ব.১৩১৯-৩৮
প্রায়
প্রতি
বছরই
মহিলা-দিবসের
উপাসনায়
আচার্যের
কাজ
করেছেন
কুসুমকুমারী,
ব্রাহ্মবাদী
পত্রিকার
সমাচার
থেকে
জানা
যায়;
অবশেষে,
এমন
একটা
স্বাভাবিক
মর্যাদার
অধিকারী
হয়েছিলেন
তিনি
যে,
ব্রাহ্মসমাজ-এর
সাধারণ
ও
কোনও-কোনও
বিশেষ
উপাসনা-সভাতেও
তিনি
আচার্যের
কর্মটা
করেছেন।
‘আমার
দিদি
বহু
বৎসর
যাবৎ
বরিশাল
ব্রাহ্মিকা-সমাজের
আচার্যের
কাজ
করেন,
সম্প্রতি
ভক্তিভাজন
আচার্য
মনোমোহনবাবুর
তিরোধানে
তিনি
সমাজের
আচার্যের
কাজ
করিতে
আরম্ভ
করিলেন।
(খ্রি.
১৯৩৯)
এই
আদ্যন্ত
পারিবারিক
ডায়েরিটি
সেই
রকম
এক
জন
পৌঢ়া
নারীর,
যাঁর
বিষয়ে
জীবনানন্দ
লিখেছেন:‘...ভাবনা
তাঁর
ব্যাপ্তি
পেয়েছিল;
কিন্তু
কিছু
লিখতে
গেলেন
না
আর
নিঃশেষে
সমাজ-সংসারের
কাজে
ক্রমে-ক্রমে
ক্ষয়িত
হয়ে
যেতে
দেখলাম
তাঁকে।
কলকাতায়
অনেক
দিন
কাটিয়েছেন,
কিন্তু
বরিশাল-এই
সভা
সমিতি
সমাজ
ও
নানা
শ্রেণির
লোকজনের
সঙ্গে
ঢের
বেশি
যোগ
ছিল।
অনেক
দিন
পর্যন্ত
বরিশাল-এর
মহিলা
‘সমিতির’র
সম্পাদিকা
ছিলেন।
আরও
কয়েকটি
বিখ্যাত
প্রতিষ্ঠানের
কর্মী
ও
কর্মচালিকা
ও
ছোট-বড়
মহিলা-সভার
সভানেত্রী
হিসেবে
তিনি
অনেক
দিন
নিজের
জ্ঞান
বুদ্ধি
ও
নিষ্ঠার
আলোয়
বরিশাল-
এ
মানবিকতার
কাজ
ক’রে
এসেছেন।
নানা
রকম
অনাথ
আতুর
পরিবারে
তাঁর
সহায়তার
ও
সেবার
কত
ব্যাপৃতি
ও
বিস্তার
দেখেছি।
পঁচিশ
ত্রিশ
পঁয়ত্রিশ
বছর
আগের
বরিশাল-এ-সমস্ত
বাংলা
দেশেই-সমাজোৎসারিত
যুক্তির-ও
উৎসাহের-যে
আকাতর
পরীক্ষা-ও
প্রাণলাবণ্য
দেখেছিলাম,
তার
সদর্থ
বুঝতে
হলে
আমাদের
দেশের
বিশ
শতকের
দু’-তিনটি
দশক
ও
উনিশ
শতকের
কাছে
যেতে
হয়-আজকের
এই
শোচনীয়
অন্ধকারের
কাছে
নয়।
এই
ডায়েরিটি
যিনি
পড়ছেন,
তিনি
ডায়েরি-লেখিকার
চেহারাটি
সম্যক
আঁচ
ক‘রে
নিতে
জীবনানন্দর
তিনটি
রচনা
প’ড়ে
নিতে
পারেন:
‘আমার
বাবা’,
‘আমার
মা’
এবং
‘আমার
মা-বাবা’।
(জীবনানন্দ
দাশ:
সমগ্র
প্রবন্ধ,
প্রতিক্ষণ,
কলকাতা,
২০০৯)।